কলার চপ: নিরামিষ হলেও স্বাদে ভরপুর

Nahar
2 minute read
0


কলার চপ 

কলার চপ বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি মুখরোচক খাবার। এটি মূলত কাঁচা কলা, মসলা ও ডিমের মিশ্রণে তৈরি একটি স্ন্যাক্স যা তেলে ভেজে পরিবেশন করা হয়। বিশেষ করে রমজানে ইফতারের সময়, বিকেলের নাশতায় অথবা অতিথি আপ্যায়নে কলার চপের জুড়ি মেলা ভার। এই চপে কাঁচা কলা ছাড়া সাধারণত ছোলা বুটের ডাল, পেয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা ও বিভিন্ন মসলা ব্যবহার করা যেতে পারে। মসলা মিশিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে তা চপের মতো করে গড়ে ডিপ ফ্রাই করা হয়। বাইরের অংশটি হয় খাস্তা ও মচমচে, আর ভেতরে থাকে নরম ও সুস্বাদু পুর। অনেক সময় এটি বেসনের ব্যাটারেও ডুবিয়ে ভাজা হয়। স্বাদে এটি এতটাই জনপ্রিয় যে মাংস বা মাছ ছাড়াও নিরামিষ হিসেবে এটি ভোজনরসিকদের মন জয় করে নেয়। বিভিন্ন অঞ্চলে কিছুটা রকমফের থাকলেও মূল উপাদান থাকে একই। সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য উপকরণে তৈরি হওয়ায় এটি বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম উভয় জায়গায় সমান জনপ্রিয়।


উপকরণ

১. কাঁচা কলা - ৪ টা

২. শুকনা মরিচ - ১ চামচ 

৩. হলুন বাটা - ১/২ চামচ 

৪. আদা রসুন বাটা - ১ চামচ

৫. জিরা ধনে বাটা - দেড় চামচ

৬. পেঁয়াজ বাটা - ২ চামচ

৭.  ডিম - ২ টা

৮. লবণ - পরিমাণ মত 

৯. তেল - পরিমাণ মত


প্রস্তুত প্রণালি

কাঁচা কলা খোসা সুদ্ধ টুকরা করে হলুদ ও পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ হলে খোসা ছাড়িয়ে নিন। পরিমাণ মত বাটা মশলা ও লবণ সিদ্ধ কলার সাথে ভাল মত চটকিয়ে মেশান। এতে দুটো ডিম ভাল মত মেশান। মাখানো উপকরণ থেকে পরিমাণ মত নিয়ে চপের আকারে গড়ে গরম তেলে ভেজে ফেলুন।


এই চপ আবার রান্না করতেও পারেন। গরম ঘি-এ পেঁয়াজ কুচি ভেজে মরিচ বাটা, ধনে ও জিরা বাটা, আদা-রসুন বাটা, অল্প পেঁয়াজ বাটা, সামান্য হলুদ বাটা কষে দই দিন। তারপর গরম মশলা দিন। সমস্ত মশলা কষান। সুগন্ধ বের হলে অল্প পানি দিন। এরপর চপ ও পরিমাণ মত লবণ দিন। উপকরণ মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন। এতে সাবধানে চপ নাড়তে হবে যাতে চপ না ভেঙ্গে যায়।


বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলতে চান, তবে মাঝে মাঝে স্বাদের ভিন্নতা আনতে কলার চপ একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে। এটি যেহেতু নিরামিষ  কলা দিয়ে তৈরি, তাই পরিমিতভাবে গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম। শহরের রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে গ্রামের হাট-বাজারেও কলার চপের দেখা মেলে, বিশেষ করে রমজানে ইফতারির সময় এটি অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন একটি আইটেম। আজকাল অনেক ঘরোয়া রন্ধনশিল্পীও কলার চপকে ভিন্ন স্বাদ ও রূপ দিয়ে তৈরি করছেন, যেমন পনির মিশিয়ে, ডিমের কোটিং দিয়ে কিংবা সস-এর সঙ্গে পরিবেশন করে। এটি শুধু একটি খাবার নয়, বরং বাংলার রান্নার ঐতিহ্যের একটি অংশ। সহজলভ্য উপকরণ, কম খরচ এবং দারুণ স্বাদের সমন্বয় কলার চপকে সাধারণ মানুষের নিত্য খাদ্যতালিকায় স্থান করে দিয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই চপ বাঙালির মুখে রস এনে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তার আবেদন একইভাবে থাকবে বলেই আশা করা যায়।


Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!