স্বাদ আর পুষ্টির সহজ সমাধান: মাছের ঝোল

Nahar
0


মাছের ঝোল বাঙালি ঘরের চিরাচরিত, সহজ ও উপকারী একটি খাবার। এটি সাধারণত টাটকা মাছ (রুই, কাতলা, পুঁটি, তেলাপিয়া ইত্যাদি) এবং আলু, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, কাঁচা মরিচ, হলুদ, লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে তৈরি করা হয়। অনেক পরিবার এতে পাঁচফোড়ন বা ধনেপাতা যোগ করে আলাদা ঘ্রাণ ও স্বাদ আনে। মাছের ঝোল সাধারণত পাতলা হয় এবং ভাতের সঙ্গে খেতে অত্যন্ত উপযোগী।


পুষ্টির দিক থেকে মাছের ঝোল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এটি শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্য উপযুক্ত, বিশেষ করে হজমে সহজ ও হালকা খাবার হিসেবে। মাছের ঝোল প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।


তাহলে দেখে নেই, মাছের ঝোল তৈরি করতে কি কি উপকরণ লাগছে


উপকরণ

১. মাছ- ১/২ কেজি

২. ফুলকপি- ২৫০ গ্রাম

৩. পেঁয়াজ কুচি- ১/২ কাপ

৪. পেঁয়াজ বাটা- ১/২ কাপ

৫. আদা-রসুন বাটা- ১/২ চা চামচ

৬. শুকনো মরিচ বাটা- ১ চা চামচ

৭. লবণ- পরিমাপ মত

৮. সরিষার তেল- পরিমাপ মত

৯. কাঁচা মরিচ ফালি- রুচি অনুসারে

১০. দারুচিনি- দু'এক টুকরা


প্রস্তুত প্রণালি

পছন্দ মত মাছ কেটে ধুয়ে রাখুন। মাছ ধোবার সময় একটু লবণ হলুদ মাখিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। মাছের পরিমাপে পেঁয়াজ কেটে ও সামান্য আদা-রসুন, শুকনো মরিচ বেটে রাখতে হবে। সবজি মাছে দিতে চাইলে পছন্দ মত সবজি কেটে রাখতে হবে। ফুলকপি দিলে ফুলকপি আগে পানি দিয়ে চুলোয় বসিয়ে খাণিকক্ষণ ভাপিয়ে নিতে হবে।


এবার একটা পরিষ্কার কড়াইতে পরিমাপ মত তেল দিন ও খুব গরম হলে (তেলের কাঁচা গন্ধটা যেন না থাকে) কাটা পেঁয়াজ দিয়ে বেশ লান করুন। মরিচ বাটা ও হলুদ বাটা গুলে কড়াইতে ঢেলে দিন এবং প্রয়োজন মত কষান। এরপর আদা, রসুন দিয়ে সামান্য কষান আদা-রসুন বেশি কষালে উপকরণ গন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। আদা-রসুন দিয়ে একটু কষার পর কুটে ও ধুয়ে রাখা সবজি কড়াইতে ঢেলে দিন। সবজি অল্প অল্প পানি দিয়ে কিছুক্ষণ কষাতে হবে। এবার তরকারীতে সামান্য পানি দিয়ে কাটা মাছ সাবধানে কড়াইয়ে ছেড়ে দিন। কড়াইয়ের মাছগুলি সাবধানে ক'একবার উলটিয়ে দিন। ঝোল যেমন রাখবেন তার থেকে সামান্য বেশী পানি পরিমাণ মত লবণ, মাছ কড়াইতে দেবার পরও দেওয়া যেতে পারে। অথবা সবজি কষাবার সময়ও দেয়া যায়। রুচি অনুসারে কাঁচা মরিচ ফালি করে দেবেন ও দারুচিনি দু'এক টুকরা দিতে পারেন। সব মাছে আদা-রসুন না দেওয়াই ভাল। একটু বড় জাতের মাছে সামান্য আদা-রসুন দেওয়া যেতে পারে। ঝোল পরিমাণ মত রাখতে হয়। বেশী রাখলে তরকারী পানসে হয় । ঝোল ঘন করতে হলে পরিমাণ মত কাটা ও বাটা পেঁয়াজ উভয়ই দিতে হবে। কাটা পেঁয়াজ প্রথমে ভেজে তারপর বাটা পেঁয়াজ ভাজতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পেঁয়াজ না পুড়ে যায়।


দিনের শেষে গরম ভাত আর হালকা ঝোল দিয়ে রান্না করা মাছের টুকরো যেন মন আর শরীর—দু’টোই জুড়িয়ে দেয়। অনেকেই মনে করেন, এটি অসুস্থ মানুষের একটি আদর্শ বিকল্প খাবার। বিশেষ করে শিশুরা, যারা ঝাল খেতে পারে না, তাদের জন্য কম মসলা দিয়ে তৈরি ঝোল মাছ একটি দারুণ স্বাস্থ্যকর খাবার।


বিশেষ কোনো উপকরণ ছাড়াই সহজে রান্না করা যায় বলে এটি বাঙালি ঘরের খুব পরিচিত ও নিয়মিত পদ। ঝালের পরিমাণ সামঞ্জস্য করে এটি বিভিন্ন বয়সের জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়। তাই মাছের ঝোল কেবল খাবার নয়—এটি বাঙালির ঐতিহ্য, স্বাস্থ্য ও স্বাদের চিরন্তন অংশ।




Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!