ভুনা খিচুড়ি – বাঙালির ঘরে ঘরে ভালোবাসা
ভুনা খিচুড়ি বাঙালি খাবারের এক রাজকীয় পদ। যা বর্ষার দিনে কিংবা ঈদের বিশেষ আয়োজনে অপরিহার্য। এই খিচুড়ি তৈরি হয় মসুর বা মুগ ডাল, বাসমতি বা আতপ চাল, ঘি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও সুগন্ধি মসলার মিশ্রণে। তবে একে বিশেষ করে তোলে এর "ভুনা" অর্থাৎ ডাল ও চালের মশলা দিয়ে কষানো প্রক্রিয়া। এই রান্নার ফলে খিচুড়ি হয় ঝরঝরে, সুগন্ধি ও সুস্বাদু।ভুনা খিচুড়ি সাধারণত মাংস, ডিম, আলু চপ বা বেগুন ভাজার সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। এতে শুধু স্বাদই নয়, পুষ্টিগুণও থাকে পূর্ণমাত্রায়। এই পদ বিশেষত উৎসব, বিয়ে বা পারিবারিক অনুষ্ঠানেও খুব জনপ্রিয়। একে রুচিকর ও পেট ভরানো খাবার হিসেবে ধরা হয়।
বৃষ্টি দিনে ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে গরম গরুর মাংস যেন হৃদয়ের পরিপূর্ণতা এনে দেয়। শুধু স্বাদেই নয়, এর গন্ধ ও পরিবেশনাও বাড়িয়ে তোলে খাবার টেবিলের সৌন্দর্য।
জেনে নেয়া যাক তাহলে কি কি উপকরণ লাগছেে এতে-
উপকরণ
১. পোলাও এর চাল- ১ কেজি২. মুগের ডাল (ভাজা)- ৭৫০ গ্রাম
৩. পেঁয়াজ- ৪০০ গ্রাম
৪. আদা- ২০০ গ্রাম
৫. রসুন - ৫০ গ্রাম
৬.গরম মশলা
৭. তেজপাতা- ২ টা
৮. ধনে- ৪০০ গ্রাম
৯. তেল- ২৫০ গ্রাম
১০. দই- ২০০ গ্রাম
১১. লবণ- পরিমাণ মত
১২. আখনির জন্য- ৪ কেজির কিছু কম পানি
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমতঃ তিন কেজি পানিতে অর্ধেক পরিমাণ পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ধনে ও পরিমাণ মত লবণ এক সাথে জ্বাল দিয়ে আখনির পানি তৈরী করে ফেলুন।বাকি অর্ধেক মশলা দই- এ ভালোমত মিশিয়ে ফেলুন। এবারে একটি পাত্রে ঘি গরম করে পেঁয়াজ ভেজে দই মাখানো মশলা ঢেলে দিন। খানিকক্ষণ নেড়ে আখনির পানি মশলায় ঢেলে দিন। পানি বলক এলে চাল ও ডাল ঢেলে দিন। পানি শুকিয়ে গেলে ডেকচী নামিয়ে ফেলুন ও খিচুরী দমে বসান।
পুষ্টিগুণ
ভুনা খিচুড়িতে আতপ চাল, মুগ ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, গরম মশলা, তেজপাতা, ধনে, দই বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যার পুষ্টিগুণ অনেক।চালে সামান্য পরিমাণে হলেও প্রোটিন, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে।
মুগ ডালে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি গ্রুপ, বিশেষ করে B1, B2 ও B9 (ফলেট) পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে।
পেঁয়াজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন C ও ফাইবার রয়েছে।
আদায় রয়েছে জিঞ্জেরল (Gingerol) যা প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। পাচনতন্ত্রে সহায়ক ও মৃদু ব্যথানাশক গুণও রয়েছে।
ধনে গুঁড়ায় রয়েছে ভিটামিন A, C, K।
আর দই এ রয়েছে প্রোবায়োটিক, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন B12 ও D।