মুরগীর রোস্ট বাংলাদেশের উৎসবের টেবিল জুড়ে জ্বলজ্বলে এক রাজকীয় পদ। ঢাকা শহর থেকে গ্রামের বিয়েবাড়ি—প্রতিটি আয়োজনে মুরগীর রোস্ট পোলাও, পরোটা অথবা নানের সঙ্গে সমান জমে।
দেখে নেই, রোস্ট তৈরিতে কি কি উপকরণ লাগছে
উপকরণ
১. মুরগী- ১ কেজি
২. তেল- ২৫০ গ্রাম
৩. পেঁয়াজ বাটা- ১২৫ গ্রাম
৪. পেঁয়াজের বেরেশতা- বড় সাইজের ৪/৫টি
৫. আদা রসুন বাটা- ২ চা চামচ
৬. চিনি- ২ চা চামচ
৭. লবণ- পরিমাণ মত
৮. কিশমিশ- পরিমাণ মত
৯. দই- ২৫০ গ্রাম
১০. গরম মশলা- পরিমাণ মত
প্রস্তুত প্রণালি
মুরগীর চামড়া ছাড়িয়ে ফেলুন ও পেছন দিকটা কেটে নাড়িভুঁড়ি বের করে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। ৪।৫ টা পেঁয়াজ বেরেশতা করে চিনি (২ টেবিল-চামচ) ও কিশমিশ মাখিয়ে রাখুন। এবার মুরগী কাটা চামচ দিয়ে কেঁচে নিন ও মুরগীর পেটের ভেতরে কিশমিশ ও চিনি মাখা বেরেশতা পুরে দিন। এরপর সাদা সুতো দিয়ে মুরগীর ডানা ও পা ভাল মত মুড়িয়ে ভাজুন। এখন বাধা মুরগী আদা রসুন বাটা, লবণ, দই, সির্কা, লেবুর রস মাখিয়ে বেশ খাণিক্ষণ রেখে দিন। বেরেস্তা ভাজার পর বাকি যে তেল থাকবে তাতে প্রয়োজন হলে আরও খানিকটা তেল ঢেলে দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। গরম হলে আদা-রসুন, লবণ ও দই মাখানো মুরগী (দই টুকু বাদ দিয়ে) ঘি-এ ঢেলে পরিমাণ মত বাদামী করে নামিয়ে রাখুন।
এখন অপর একটি পাত্রে বাকী তেল ঢেলে চুলায় বসিয়ে দিন ও তেল গরম হলে বাটা পেঁয়াজ তেলে দিয়ে বাদামী করে ভাজুন। এরপর বাদামী করে রাখা মুরগী কষা পেঁয়াজে ঢেলে দিন। এবার দই-টুকু মাংস ঢেলে দিন (সম্পূর্ণ দই টুকু দিলে যদি মাংস কষানোর আগেই বেশী সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে কষানোর পরে দেবেন)। পানি শুকিয়ে গেলে রোস্টে গরম মশলা ও তেজপাতা দিন ও প্রয়োজন মত পানি দিয়ে রোস্ট কষান। রোস্টের রং কষবার সময় বাদামী হবে। কষার সময়ই যেন মাংস আধা সিদ্ধ হয়। কষানো হলে সম্পূর্ণ দই ও পরিমাণ মত পানি রোস্টে দিন। পানি শুকিয়ে গিয়ে তেল বের হলে ও মাংস সুসিদ্ধ হলে রোস্ট চুলার ওপর থেকে নামিয়ে ফেলুন ও চিনি, কিশমিশ মাখা বেরেস্তা রোস্টে ছড়িয়ে দিন। সম্ভব হলে পাত্র ঢেকে দিয়ে ঢাকনার ওপর কাঠ কয়লার আগুন চাপা দিন। এতে রোস্ট আরও সুস্বাদু হবে। ৪/৫ মিনিট পরে আগুন নামিয়ে ফেলবেন।
ইচ্ছা করলে ভাজা আলু (তেলে ভেজে নেবেন), পেস্তা বাদান কুচি বেরেস্তার সাথে মাখিয়ে মুরগীর পেটের ভেতর দিতে পারেন। দই-এ পরিমাণ মত সির্কা মেশাতে পারেন। দমে থাকাকালীন রোস্টে অল্প গাঢ় ঘন দুধ ও লেবুর রস দিতে পারেন। এতে রোস্ট আরও খাস্তা হবে।
স্বাস্থ্য সচেতন অনেকে ওভেন বা এয়ার ফ্রায়ারে তেলহীন বিকল্প বানালেও, ঘিয়ের ধোঁয়া ওঠা ঐতিহ্যিক স্বাদই আসল আকর্ষণ। সোনালি ঝলমলে গ্রেভি, মসলা-পোড়া গন্ধ ও নরম তুলতুলে তন্তু একযোগে বাঙালি রসনায় এনে দেয় তৃপ্তির পরিপূর্ণতা। অতিথি বিদায়ের পরও প্লেটের দুধসাদা চিনামাটির উপর ঝরনা ছড়িয়ে থাকা মশলার সুবাস স্মৃতিতে পাক খেতে থাকে। রাত জেগেও মন খুঁজে ফেরে।