নোনতা মাংস বাংলার প্রাচীন সংরক্ষণ-প্রযুক্তি ও স্বাদদর্শনের এক অভিন্ন প্রতীক। লবণ দিয়ে ঝটপট ম্যারিনেট করা এই মাংস আগের দিনে গ্রামাঞ্চলে ফ্রিজের অনুপস্থিতিতে দীর্ঘদিন রাখার কৌশল ছিল; লবণ মাংসের আর্দ্রতা শোষে, ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি রোধ করে এবং মাংসকে অনন্য গভীর স্বাদ দেয়। আধুনিক রেস্তোরাঁয় নোনতা মাংস বিশেষ মশলা, কাঁচা মরিচ, বিজনা পেঁয়াজ ও ঘি দিয়ে ধীর আগুনে রান্না হয়, ফলে লবণের খামচি ও মাংসের প্রাকৃতিক উমামি মিলে অসাধারণ সমন্বয় গড়ে তোলে।
তাহলে দেখে নেই, এই নোনতা মাংস তৈরি করতে কি কি উপকরণ লাগছে
উপকরণ
১. মাংস- ১ কেজি
২. লেবুর রস- ৩ টা
৩. লবণ- পরিমাণ মত
৪. সির্কা- ৩ চা-চামচ
৫. চিনি-৬ চামচ
৬. পানি- ১/২ পেয়ালা
৭. আদা রসুন- আন্দাজ মত
৮. পেঁয়াজ কুচি- ৭/৮টা
৯. পুদিনা পাতা- পরিমাণ মত
১০. কাঁচা মরিচ- ৩/৪ টা
১১. গরম মশলা- পরিমাণ মত
১২. বেকিং পাউডার- পরিমাণ মত
১৩. ওয়েসেসটার সস- ২ চা-চামচ
১৪. আলু- ৩/৪ টা
প্রস্তুত প্রণালি
মাংস ভাল মত লেবুর রস মাখিয়ে কেঁচতে হবে কাঁটা চামচ দিয়ে। এরপর লবণ দিয়ে মেখে আরও কেঁচতে হবে।
অপর দিকে চিনি ও পানি দিয়ে লাল সিরা করে টুকরা মাংসে দিতে হবে। ভাল মত মাখিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে ২ দিন।
আদা, রসুন, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ, পুদিনা পাতা, গরম মশলা এক সাথে বেটে রসটা নিতে হবে। অল্প রস, অল্প সির্কা ও ২ চা-চামচ সস মাংসে মাখাতে হবে। এবারে মাংস ছটাক ১০০ গ্রাম ঘি এ লাল করে ভেজে ছুরি দিয়ে স্লাইস করতে হবে। মাংসের স্লাইস অল্প ভেজে নিতে হবে। বাকি ঘি এ মশলার রস দিয়ে একটু গরম করে মাংস দিতে হবে। এতে আলু গোটা ভেজে দিতে হবে। এই মাংস প্রেসারে ঢেলে ৭০০ গ্রাম পানি দিয়ে বসাতে হবে। সিদ্ধ হলে অগ্ন সির্কা দিয়ে নামাতে হবে। মাংস মাখা মাখা হবে।
এই পদ ভাত, নরম রুটি বা পোলাওয়ের সঙ্গে দুর্দান্ত মানায়। যারা স্বাস্থ্য-সচেতন, তারা সোডিয়াম কমাতে ভিজিয়ে লবণ ধুয়ে নিয়ে কম তেলে সেঁকে নেন, তবু স্বাদের আদি শেকড় অটুট থাকে। ঈদ, নবান্ন কিংবা পাহাড়ি ট্রেক— যেখানেই প্রোটিনের স্থায়িত্ব দরকার, নোনতা মাংসেই ভরসা। লম্বা ভ্রমণে কৌটায় ভরে নিলে এটি সহজে নষ্ট হয় না, আবার আগুন ছুঁয়ে নিলে মুহূর্তে গরম খাবারে পরিণত হয়। প্রজন্মের অভিজ্ঞ হাত ও আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নোনতা মাংস আজও বাংলার ক্যালেন্ডারে ঠাঁই করে রেখেছে এক অতুলনীয়, লবণাক্ত স্মৃতির আসন। পাশাপাশি ধনেপাতা কুচি ও লেবুর রস ছিটিয়ে দিলে লবণাক্ততার মাঝে স্নিগ্ধ টক-তাজা ব্যালান্স গড়ে ওঠে। ঝাল-প্রেমীরা কাঁচা ও শুকনো মরিচ গুঁড়া বাড়িয়ে উপমহাদেশীয় তেজ ধরে রাখতে পারেন। আরো মাখন দিলে স্বাচ্ছ্যন্দ বাড়ে।